প্রায়শই একটি বিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেন। আর সেটি হচ্ছে গানের রি-অ্যারেঞ্জমেন্টস করা এবং গানটির কপিরাইট কে দাবি করতে পারবে?
বিষয়টি হচ্ছে- আপনি যদি কোন নতুন বা পুরাতন গানের রি-অ্যারেঞ্জমেন্টস (নিউ মিউজিক্যাল কম্পোজিশন, নিউ ভয়েস রেকর্ডিং, নিউ সাউন্ড/অডিও রেকর্ডিং) করেন তাহেল আপনি কি সেই গানটির সেই নতুন ভার্সনের মালিক হতে পারেন বা সেই ভার্সনটির অর্থ ভোগ করতে পারেন?
উত্তরঃ প্রথমত কথা হচ্ছে গানটির গীতিকার, সুরকার এর নিকট হতে আপনাকে গানের বাণী ও সুর অবিকৃত রাখার শর্তে রি-অ্যারেঞ্জমেন্টস করার জন্য অবশ্যই অনুমতি (NOC) নিতে হবে। এই অনুমতি (NOC)তে গানের রয়্যালিটির বিষয়টিও উল্লেখ থাকা উত্তম। এরপর গানটির রি-অ্যারেঞ্জমেন্টস যদি আপনার নিজস্ব অর্থায়ন বা বিনিয়োগে হয় তাহলে এককভাবে সেই নতুন ভার্সনটির মালিক বা গানটির আর্থিক লাভ-ক্ষতির ভাগিদার হবেন আপনি। আর গানটির অর্থায়ন বা বিনিয়োগ যদি অন্য কোন পক্ষ কর্তৃক হয় এবং শুধুমাত্র রি-অ্যারেঞ্জমেন্টস আপনার দ্বারা সম্পন্ন হয় তবে ভবিষ্যত জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে গানটির নতুন ভার্সনের বিস্তারিত বিষয় এবং শর্ত লিখে উভয়ের সম্মতি, উভয়ের স্বাক্ষর এবং স্বাক্ষীর স্বাক্ষরে একটি ডিড ডকুমেন্টস (Deed of Agreement) করা উত্তম। যাতে পরবর্তীতে কোন জটিলতা সৃষ্টি হলে ঐ ডিড ডকুমেন্টস (Deed of Agreement) এর আলোকেই সমস্যার সমাধান করা যায়। এই ক্ষেত্রে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, এটি কিন্তু চলচ্চিত্র বা ফিল্মের গানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ, কপিরাইট আইন অনুযায়ি সারা বিশ্বেই চলচ্চিত্র বা ফিল্মের গানের ক্ষেত্রে এককভাবে গানটির আর্থিক লাভ বা ক্ষতির ভাগিদার হন প্রযোজক বা চলচ্চিত্র/ফিল্মের বিনিয়োগকারী।
এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে, গানটির নতুন ভার্সনের কপিরাইট এর মূল স্বত্বাধিকারী (মোরাল রাইটস) কিন্তু উপরোল্লেখিত উভয় পক্ষের কেউই শুধুমাত্র গীতিকার, সুরকার না হওয়ায় হতে পারেন না। উনারা হতে পারেন শুধুমাত্র 'কমার্শিয়াল রাইটস' এর অধিকারি।
© ফাহিম ফয়সাল
সংগীতশিল্পী, সংগীতপরিচালক, কপিরাইট গবেষক-বিশ্লেষক-পরামর্শক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক